তিনি ওই ব্রিজের পাশে একটি ছোট ড্রেন দেখিয়ে বলেন, ওইখানে একটি নর্দমার মতো রয়েছে। সেই ড্রেনের ভেতরে বোরকা পরে শুয়ে ছিলেন প্রতারক সাহেদ। শোয়া অবস্থায় তাকে গ্রেফতার করে র্যাব। এ সময় তার পরনে শার্ট, প্যান্ট ও বোরকা ছিল। কোমরে ছিল একটি পিস্তল। পরে র্যাবের উপস্থিত জনতার সঙ্গে কথা বলে ও ছবি তুলে তাকে এখান থেকে নিয়ে যায়। সর্বশেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী গতকাল বুধবার সকাল ৯টার দিকে রিজেন্ট গ্রুপ ও রিজেন্ট হাসপাতাল লিমিটেডের চেয়ারম্যান সাহেদ করিম ওরফে মো. সাহেদকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি ঢাকায় এসে পৌঁছে।
এলাকাবাসী মারতে চেয়েছিলেন সাহেদকে : করোনা মহামারির এ সময়ে সবাই যখন নিজেদের জীবন বাঁচানোর লড়াইয়ে ব্যস্ত তখন সাহেদের এমন প্রতারণার খবরে ক্ষুব্ধ দেশের মানুষ। যার প্রতিফলন দেখা গেল সাহেদ গ্রেফতারের পরে। গ্রেফতারের পর র্যাবের হেফাজতে থাকা অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে মারতে চেয়েছিলেন। সাতক্ষীরায় র্যাব যখন সাহেদকে ধরে নিয়ে আসছিল তখন এক কিশোর ভিডিও ধারণ করছিল। সেই কিশোর র্যাবেবের কাছে আবদার করে বলল; ‘সবাই মিলে একটু মারলে হইতো।’যদিও র্যাব ওই কিশোরের আবদার রাখেনি।
স্থানীয়রা জানান, র্যাবের হেফাজতে থাকা অবস্থায় ওই কিশোরের মতো বেশ কয়েকজন এলাকাবাসী সাহেদের দিকে মারমুখী হন। কিন্তু র্যাবের বাধার কারণে তারা মারতে পারেননি। গ্রেফতার হওয়া সাহেদকে ঢাকায় র্যাবের সদর দফতরে নেওয়া হয়েছে। বুধবার সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে তাকে নিয়ে সেখানে নেওয়া হয়। সেখানে তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। র্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া ইউংয়ের পরিচালক আশিক বিল্লাহ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মোটা হওয়ায় দৌড়াতে পারেনি : গ্রেফতারের পর তাকে নিয়ে আসা হয় র্যাব-৬-এর আওতাধীন সাতক্ষীরা র্যাব ক্যাম্পে। সেখান থেকে সকাল ৮টায় নিয়ে আসা হয় সাতক্ষীরা স্টেডিয়ামে। এরপর র্যাবের একটি বিশেষ হেলিকপ্টারে তাৎক্ষণিক তাকে ঢাকায় নেওয়া হয়। সাতক্ষীরা স্টেডিয়ামে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন র্যাবের এডিজি কর্নেল তোফায়েল আহম্মেদ। তিনি বলেন, আমরা তার (সাহেদ) গতিবিধি আগে থেকেই অনুসরণ করছিলাম। ঘন ঘন স্থান পরিবর্তন করছিল সাহেদ। তিনি সীমান্ত নদী ইছামতী দিয়ে ভারতে পালিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। সেজন্য দালালদের সঙ্গেও যোগাযোগ করে। সাহেদকে যে দালাল সহযোগিতা করার চেষ্টা করেছে তাকেও আমরা গ্রেফতার করব।
চুল ছেঁটে, গোঁফ ফেলেও লাভ হলো না : তিনি আরও বলেন, সাহেদের কাছ থেকে আমরা বিশেষ কিছু তথ্য পেয়েছি। সাহেদের বেশ পরিবর্তনের বিষয়ে র্যাবের এডিজি কর্নেল তোফায়েল আহম্মেদ বলেন, চুলের রঙ পরিবর্তন করে সাদা চুল কালো করেছে সে। গোঁফ কেটে কালো করে ফেলেছে। তার প্ল্যান ছিল মাথা ন্যাড়া করার। ভারতে গেলে হয়তো ন্যাড়া করে ফেলত। র্যাবের এডিজি বলেন, সাহেদকে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার কাজে সহযোগিতা করছিল একজন মাঝি, সে সাঁতরে পালিয়ে গেছে। তবে সাহেদ করিম মোটা হওয়ায় হয়তো দৌড়াতে পারেনি। যার কারণে তাকে আমরা ধরতে সক্ষম হয়েছি। বোরকা পরা অবস্থায় নৌকায় উঠে পালিয়ে যাওয়ার আগেই তাকে আমরা ধরে ফেলেছি।